২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রাক্কালে বিজেপিতে জোর ধাক্কা। তৃণমূল কংগ্রেস যোগ দিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলা। আজ, বৃহস্পতিবার তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি এবং মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে সরকারিভাবে শাসকদলে যোগ দিলেন জন বারলা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের আগে পদ্ম দিঘিতে বড় ভাঙন দেখা দিল। আজ কলকাতার তৃণমূল ভবনে এসে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ ফাঁস করলেন।
এদিকে জন বারলাকে পাশে বসিয়ে সুব্রত বক্সি বললেন, ‘রাজ্য বিজেপিতে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন জন বারলা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজে খুশি হয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর আবেদন অনুমোদন করেছেন।’ ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে জয়ী হয়ে সাংসদ হন জন বারলা। কেন্দ্রের সংখ্যালঘু উন্নয়ন মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রীও ছিলেন। জন বারলার সঙ্গে ২০২৪ সাল থেকে বিজেপির দূরত্ব বাড়তে থাকে। আজ, বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে জন বারলা সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘মন্ত্রী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে অনেক বাধা পেতে হয়েছে।’
আরও পড়ুন: জুন মাসে শুরু হচ্ছে বিধানসভার গ্রীষ্মকালীন অধিবেশন, একাধিক বিল পেশের সম্ভাবনা
অন্যদিকে প্রাক্তন সাংসদ জন বারলা বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী সুযোগ দিলে তিনি একসঙ্গে কাজ করতে চান। তারপর গত জানুয়ারি মাসে কালচিনিতে মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চে দেখা যায় বারলাকে। অবশেষে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিলেন জন বারলা। এটা বাংলার বিধানসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গে বড় প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। জন বারলার বক্তব্য, ‘১৬০ কোটির হাসপাতাল বানাতে চেয়েছিলাম। রেলের জমিতে হাসপাতাল তৈরি হচ্ছিল। ১০০ শতাংশ ফান্ড জোগাড় করেছিলাম। বিরোধী দলনেতা আটকে দিয়েছিলেন। মানুষের জন্য কাজ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারী আটকে দেন। এভাবে আটকালে কে দলে কাজ করবে?’
তাছাড়া উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে নানা কাজ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নয়া দিশা পেয়েছেন চা–বাগানের শ্রমিকরা। তবে জনসমর্থনে জিতে মন্ত্রী হলেও সাধারণ মানুষের জন্য কিছুই করতে পারেননি জন বারলা। প্রাক্তন এই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আজ দলবদল এবং ফুলবদল করে বলেন, ‘সাত মাস আগে থেকে কথা চলছিল। দিদি ফোন করেছিলেন। আমি চেয়েছিলাম চা–বাগান নিয়ে কাজ করতে। মন্ত্রী হয়ে কাজ করতে গিয়ে সবসময় বাধা পেয়েছি। শুভেন্দু রেল দফতরে ফোন করে কাজে বাধা দেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর চা–বাগানের জন্য অনেক কাজ করেছেন। জমির পাট্টাও দিয়েছেন। কেন এই দল করব যেখানে আমাকে বাধা দেওয়া হয়। আমার দলই আমাকে অপমান করেছে। উন্নয়নের কাজ করতে দিত না। আদিবাসীদের অধিকারও ছিনিয়ে নেওয়া হবে এবার। দিদি সবাইকে নিয়ে চলেন।’