মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার উত্তরপত্র বাতিল করে দেওয়া হল? নতুন করে পরীক্ষা নেওয়া হবে? এমনই দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। একটি বাংলা সংবাদমাধ্যমে যেমন খবর প্রকাশ করা হয়, সেরকম ধাঁচেই ওই ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে লেখা আছে, '২০২৫ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার খাতা বাতিল। নতুন করে পরীক্ষা করাতে হবে সকল ছাত্রছাত্রীর। জানিয়ে দিল শিক্ষক সংগঠন।' সঙ্গে ওই ছবিতে লেখা রয়েছে, ‘খাতা দেখা বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত।’
ভুয়ো খবর ছড়ানো হচ্ছে!
তারপরই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। যদিও কোনও শিক্ষক সংগঠনের তরফে সেরকম কোনও ঘোষণা করা হয়নি। সেইসঙ্গে যে ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে, তা যে পুরোপুরি ভুয়ো, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ সংশ্লিষ্ট যে হরফে সেই লেখা হয়েছে, তা ওই সংবাদমাধ্যমের তরফে ব্যবহার করা হয় না। ওই সংবাদমাধ্যমে ওরকম কোনও প্রতিবেদনও খুঁজে পাওয়া যায়নি।
SSC মামলার রায়ের পরই সেই ভুয়ো খবর ছড়ানো হয়
আর ওই ছবি যে ছড়িয়ে পড়েছে, সেটার নেপথ্যে ২০১৬ সালের স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় আছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ সুপ্রিম কোর্টের রায়ে চাকরিচ্যুত হয়ে গিয়েছেন প্রায় ২৬,০০০ শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী। তাঁদের মধ্যে অনেকে নবম, দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষকও আছেন। সেই পরিস্থিতিতে আশঙ্কা তৈরি হয় যে তাহলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের উত্তরপত্র দেখার জন্য পর্যাপ্ত শিক্ষক পাওয়া যাবে তো? সময় মতো ফলাফল প্রকাশ করা যাবে?
আরও পড়ুন: HS examination 2025: ট্যাবের টাকা নিয়েও HS-এ বসেনি ৫০,০০০ পড়ুয়া, পদক্ষেপ করা হবে কি? জানালেন সচিব
উচ্চমাধ্যমিকের উত্তরপত্র দেখতে পারবেন চাকরিচ্যুত শিক্ষকরাও
বিষয়টি নিয়ে অবশ্য মাধ্যমিক পরীক্ষার আয়োজক মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বা উচ্চমাধ্যমিকের আয়োজক সংস্থা উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে কিছু জানানো হয়নি। মঙ্গলবার সংসদের তরফে শুধু জানানো হয়েছে, এসএসসি মামলার রায়ে যে শিক্ষকরা চাকরিচ্যুত হয়েছেন, তাঁরা যদি চান, তাহলে উচ্চমাধ্যমিকের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করতে পারবেন। যদি কেউ নিজে থেকেই উত্তরপত্র মূল্যায়ন করতে না চান, তাতেও সংসদের আপত্তি নেই। সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের থেকে উত্তরপত্র দিয়ে অন্যদের দেওয়া হবে বলে সংসদের তরফে জানানো হয়েছে।
একটি মহলের তরফে দাবি করা হয়েছে, এসএসসি মামলার রায়ের আগেই উত্তরবঙ্গ এবং মেদিনীপুর ডিভিশনের প্রায় ৯০ শতাংশ উত্তরপত্র জমা পড়ে গিয়েছে। অর্থাৎ মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। কিন্তু বর্ধমান এবং কলকাতা ডিভিশনের ক্ষেত্রে সেটা হয়নি। সেই পরিস্থিতিতে যদি চাকরিচ্যুত শিক্ষকরা উত্তরপত্র ফিরিয়ে দেন, তাহলে বাকিদের উপরে কিছুটা চাপ বাড়তে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।