মাঝের একটা মাস বাদ দিলে সব স্কুলেই পড়ে যাবে গরমের ছুটি। আর তখন ভিড় দেখা যাবে পাহাড় থেকে ডুয়ার্সে। সেখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থেকে শুরু করে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে সাফারি করতে আসবেন পর্যটকরা। কিন্তু এবার থেকে যে নতুন নিয়ম হয়েছে। আর তাতে পর্যটকদের এখন থেকে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পে যেতে হলে বাধ্যতামূলক ‘এন্ট্রি পারমিট’ রাখা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, জিপসি সাফারি করলে বাধ্যতামূলকভাবে আধার কার্ড বা অন্য কোনও সরকারি স্বীকৃত পরিচয়পত্র পর্যটকদের আগে জমা দিতে হবে। তারপর এন্ট্রি নিতে হবে। এই কাজটি করলে তবেই মিলবে ‘এন্ট্রি পারমিট’। কিন্তু এই জঙ্গলে প্রবেশ করার জন্য কোনও মূল্য দিতে হবে না।
এখানে আধার কার্ড বা অন্য কোনও সরকারি পরিচয়পত্র দিলে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্মীরা তা খাতায় লিখে রাখবেন। সেক্ষেত্রে কারা এখানে আসছেন, কোন তারিখে আসছেন সেসব পরিচয় লিপিবদ্ধ থাকবে। আর প্রবেশে টাকাকড়ি লাগবে না কারণ গত ২২ জানুয়ারি আলিপুরদুয়ারে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে ছিলেন, পর্যটকরা এখানে আসলে প্রবেশ মূল্য দিতে হয়। অবিলম্বে তা প্রত্যাহার করা হোক। তার পর থেকেই এই প্রবেশমূ্ল্য উঠে গিয়েছে। স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলালের কাছ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে পারেন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের জঙ্গলে প্রবেশ করার জন্য পর্যটকদের গুণতে হয় মোটা টাকা। এরপর রাজ্যের সংরক্ষিত বনাঞ্চলগুলিতে প্রবেশ মূল্য তুলে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ‘লাঠি দিয়ে মেরে ভোটকেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া উচিত ছিল’, অখিলকে তোপ দিলীপ ঘোষের
এই প্রবেশ মূল্য উঠে যাওয়ার পর পর্যটকদের ভিড় অত্যন্ত বেড়ে গিয়েছে বলে বন দফতর সূত্রে খবর। আর তার মধ্যেই এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে একশ্রেণির পর্যটকরা অবাধে জঙ্গলে প্রবেশ করছেন আর যাওয়ার সময় কেটে নিয়ে যাচ্ছেন নানা গাছ বলে অভিযোগ। এমনকী কিছু স্থানীয় অসাধু ব্যবসায়ীরাও এই সুযোগে বক্সায় ঢুকে গাছ কেটে পাচার করে দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাই পর্যটকদের নাম এবং পরিচয় সহ নথি এবার থেকে নিয়ে লিপিবদ্ধ করা হবে। এই গাছ কাটার বিষয়টি নজরে আসার পরই নড়েচড়ে বসে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্প কর্তৃপক্ষ।
এবার থেকে এখানে পর্যটকদের পরিচয়পত্র জমা রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। আর রাজাভাতখাওয়া চেক পোস্টে বাধ্যতামূলক পর্যটকদের পরিচয়পত্র জমা দিতে হবে। কোনও প্রবেশমূল্য ছাড়াই ‘এন্ট্রি পারমিট’ দেওয়া হবে পর্যটকদের। প্রত্যেক পর্যটককে ন্যাশনাল টাইগার কনজারভেশন অথরিটির গাইডলাইন মেনে চলতে হবে। কোনও বন্যপ্রাণীদের বিরক্ত করা যাবে না, হর্ন বাজানো যাবে না, স্পট লাইট ব্যবহার করা যাবে না। এই বিষয়ে বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ক্ষেত্র অধিকর্তা অপূর্ব সেন বলেন, ‘বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ভিতরে বসবাসকারীদের জন্য এই পারমিটের প্রয়োজন নেই। বাইরের পর্যটকদের এটা মানতে হবে। তাঁদের পরিচয়ের নথি যাতে বন দফতরের কাছে জমা দেওয়া হয় তাই এই সিদ্ধান্ত।’